ইহুদী ও খ্রিষ্টান ধর্মে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ইহুদী ও খ্রিষ্টান ধর্মে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ইহুদী
ও খ্রিষ্টান ধর্মে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম | খ্রিষ্টান
ধর্মের ধর্মগ্রন্থ বাইবেল। বাইবেলের দুইটা খণ্ড। ওল্ড টেস্টামেন্ট আর নিউ
টেস্টামেন্ট। কেথােলিক খ্রিষ্টানদের মতে বাইবেলে ৭৩টা বই আছে। আর
প্রােটেস্টান্টদের মতে, তারা ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ ওল্ড টেস্টামেন্ট থেকে সাতটা
বই বাদ দিয়েছে। তাই তাদের বাইবেলে আছে ৬৬ টা বই। এদিকে কেথােলিক আর
প্রােটেস্টান্টদের নিউ টেস্টামেন্ট সেখানে সাতাশটা বই আছে। কিন্তু কেথােলিকদের মতে
ওল্ড টেস্টামেন্টে আছে ৪৬ টা বই। প্রােটেস্টান্টদের মতে সেখানে ৩৯টি বই আছে। ওল্ড টেস্টামেন্টে
সে সব নবীদের কথা বলা আছে যারা ঈসা (আ) এর পূর্বে এ পৃথিবীতে এসছিলেন। আর
নিউটেস্টামেন্টে যিশু খ্রিষ্টের জীবন আর তার সময়ের কথা বলা হয়েছে।
আমরা
প্রথমে ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থে নবীজির সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বর্ণনা
নিয়ে কথা বলবাে । ওল্ড টেস্টামেন্টের Book of Deuteronomy এর
১৮ অধ্যায় ১৮ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- মহান ঈশ্বর বলেছেন, আমি
তােমার মত করে তােমার ভাইদের মধ্য হতে একজন নবীকে পাঠাবাে। আমি তাকে ধর্ম প্রচার
করতে বলবাে। সে আমার আদেশে সব কথা বলবে।
ঈশ্বর
বলছেন আমি একজন নবী পাঠাবাে তােমার ভাইদের মধ্য হতে যে তােমার মত হবে। অর্থাৎ মূসা
(আ) এর মত হবে। আর খ্রিষ্টানরা বলে যে এ কথাগুলাে বলা হচ্ছে যিশু খ্রিস্ট বা ঈসা
(আ) সম্পর্কে।
তাদেরকে
যদি বলি যে, এটা কিভাবে ঈসা (আ) সম্পর্কে হয়; তারা
বলে যে, যে নবী আসবেন তিনি মূসা | (আ)
এর মত হবেন, আর ঈসা (আ) ছিলেন মূসা (আ) এর মতই । তারপর যদি বলি
তাদের মধ্যে মিলটা
কোথায়? তারা
তখন বলে যে, মূসা ও ঈসা (আ) তারা দুজনেই আল্লাহর নবী ছিলেন। আর তারা
দুজনেই ইহুদী। তাই এখানে যিশু বা ঈসা (আ) সম্পর্কেই বলা হয়েছে। এই দুটো ব্যাপার
এক হলেই যদি দাবী করা হয় যে, তিনি
নবী ছিলেন আর ইহুদী ছিলেন, তাহলে বাইবেলে যতজন নবীর উল্লেখ আছে মূসা (আ) এর পরে
সবার বেলায় এটা খাটে। যেমন ধরেন সােলায়মান, ইজিফিয়েল, আইজেক, আইজায়া, দানিয়েল, হােসিয়া, জোয়েল, জলা
ব্যাপ্টিস্ট। তারা সবাই আল্লাহর নবী । সবার বেলারই এটা খাটে।
ভালাে
করে লক্ষ করলে দেখা যায় এই ভবিষ্যদ্বাণী সবচেয়ে বেশী মিলে যায় আমাদের নবী
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে। আসুন দেখি ভবিষ্যদ্বাণীতে কি
বলা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে, আমি
একজন নবী পাঠাবাে তােমার ভাইদের মধ্য হতে যে তােমার মত হবে অর্থাৎ মূসা (আঃ) এর
মত। লক্ষণীয় যে, মূসা আর মুহাম্মদ (স) তারা দুজনেই জন্মেছিলেন স্বাভাবিক
ভাবে। তবে যিশু বা ঈসা স্বাভাবিকভাবে জন্ম নেননি, | তিনি
কোন পুরুষের ঔরষজাত হয়ে জন্মগ্রহণ করেননি।
পবিত্র
কোরআনের সূরা ইমরানের ৪৫-৪৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন- তিনি কোন পুরুষের ঔরসজাত
হয়ে জন্মাননি, তিনি
অলৌকভাবে জন্মেছেন।" এছাড়াও বাইবলের গসপেল অফ ম্যাথিউর ১নং অধ্যায়ের ১৮
অনুচ্ছেদে ৩৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে এভাবে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ছিলেন মূসা (আ) এর মত । কিন্তু ঈসা (আ) মূসা (আ) এর মত ছিলেন না। এরপর
আরাে দেখবেন, মূসা
(আ) এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুজনেই বিবাহিত ছিলেন। তাদের
সন্তান ছিলাে। কিন্তু বাইবেলের কথা মতে ঈসা (সা) অবিবাহিত ছিলেন। তার কোন সন্তান
ছিলাে না। তাহলে যিশু মূসার মত ছিলেন না। বরং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম মূসা (আ) এর মত ছিলেন।
মূসা
(আ) এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুজনেরই স্বাভাবিক মৃত্যু
হয়েছে। কিন্তু যিশু বা ঈসা (আ) স্বাভাবিকভাবে মারা যাননি। পবিত্র কোরআনের সূরা
নিসার ১৫৭-১৫৮ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন- . .
অর্থ
: “আল্লাহ ঈসা (যিশুকে) তার কাছে তুলে নিয়েছেন।"
আমরা
জানি তিনি মারা যাননি। আর ভালাে করে বাইবেল পড়লেও প্রমাণ করা যায় তিনি মারা
যাননি। কিন্তু খ্রিষ্টানরা মনে করে যে যিশু বা ঈস ক্রশবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তবে
তর্কের খাতিরে এই কথা মেনে নিলেও বলতে হবে, যিশু
ঈসা (আ) এর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। খ্রিষ্টানরা বাইবেলের ভুল ব্যাখ্যা করে।
তারপরও সেটা মানলে এটা জানবেন যে যিশুর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি।
আমরা
মানি তাকে জীবিত তুলে নেয়া হয়েছে, তাহলে
আমরাও জানি তার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। অর্থাৎ ঈসা (আ) মূসা (আ) এর মত নয় বরং
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মূসা (আ) এর মত।
মূসা
(আ) এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, দুজনেই
নতুন শরীয়ত এনেছেন। তবে বাইবেলের ভাষ্য মতে যিশু বা ঈসা (আ) নতুন কোন শরীয়ত
আনেননি। বাইবেলের গসপেল অন ম্যথিউ ৫নং অধ্যায়ের লেকচার সমগ্র - ৩৭ (ক)
বিভিন্ন
ধর্ম গ্রন্থে হযরত মুহাম্মদ (সা) ১৭-১৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- ভেব না যে আমি
নবীদের শরীয়ত ধ্বংস করতে এসেছি আমি ধ্বংস করতে আসিনি, পূর্ণ
করতে এসেছি ।
মুসা
(আ) এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর নবী হওয়ার পাশাপাশি
পৃথিবীতে শাসক হিসেবে ছিলেন অর্থাৎ কেউ অপরাধ করলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ক্ষমতা
রাখতেন। এক্ষেত্রে যিশু বা ঈসা (আ) এর এ ক্ষমতা ছিল না। গসপেল অব জন এর ১৮
অধ্যায়ের ৩৬ নং অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে, যিশু
তার নিজের মুখে বলেছেন “আমার রাজত্ব এ পৃথিবীতে নয়।”
মুসা
(আ) এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাদের সময়ের অনুসারীরা
আল্লাহর নবী হিসেবে মেনে নিয়েছিল। যিশু খ্রিস্টের সময় বেশিরভাগ লােক তাকে
আল্লাহর নবী বলে মেনে নেয়নি।
গসপেল
অব জনের ১নং অধ্যায়ের ১১ নং অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে- সবাই তাকে ত্যাগ করেছিল। তাহলে
ভাল ভাবে লক্ষ্য করলে আপনারাও বুঝবেন যে, মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন মুসা (আ) এর মত । কিন্তু ঈসা (আ) মুসা (আ)
এর মত নন। তাহলে এই ভবিষ্যত বাণীটা মূলত নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সম্পর্কেই করা হয়েছে। | এখানে লক্ষণীয় বলা হয়েছে আমি একজন নবী পাঠাবাে তােমার
ভাইদের মধ্য হতে । আর আমরা জানি, আরবরা
ইহুদীদের জ্ঞাতি ভাই। মুসা নবী ইহুদী ছিলেন, মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন আরব। অর্থাৎ আরব আর ইহুদীরা জ্ঞাতি ভাই ।
এখানে
আরাে বলা হয়েছে যে, আমি একজন নবী পাঠাবাে যে তােমার মত করে, আমার
কথামত ধর্মপ্রচার
করবে, সে
আমার আদেশ পালন করবে। আমরা জানি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর
কাছ থেকে ওহী প্রাপ্ত হয়েছিলেন আর যা শুনেছিলেন তাই প্রচার করেছিলেন। যেন তার মুখ
দিয়ে আল্লাহর কথাই বের হচ্ছে। আর আল্লাহর আদেশেই তিনি পালন করেছিলেন। তাই এ
ভবিষ্যত বাণীতে আসলে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথাই বলা
হয়েছে।
Book
of Deutronomy-এর ১৮ নং অধ্যায়ের ১৯ অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে- “তােমরা
আমার কথা না মানলে আমি তােমাদের ওপর প্রতিশােধ নিবাে।” তার
মানে যারা এ নবী বা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা শুনবে না, আল্লাহ
তাদের ওপর প্রতিশোধ নিবেন। বুক আর আইজায়া এর ২৯ নং অধ্যায়ের ১২ নং অনুচ্ছেদের
আছে- আসমানী কিতাব যাকে দেয়া হবে সে শিক্ষিত নয়। কিতাব দেয়া হবে সেই নবীকে যে
শিক্ষিত নয়। তাকে যখন বলা হবে যে এটা পড়, সে
বলবে আমি পড়তে জানি না। আর আমরা জানি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
কাছে নিয়ে এসে ওহী জিবরাঈল (আ) তাকে বললেন ইকরা, পড়
। তিনি বললেন আমি পড়তে জানি না। এভাবে উক্ত বর্ণিত ভবিষ্যদ্বাণী মতে আসমানি কিতাব
যে নবীকে দেয়া হলাে, তিনি হলেন অশিক্ষিত তা সত্যি হলাে। আমরা জানি যে
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিরক্ষর ছিলেন। তিনি ছিলেন উম্মী। আর
যখন তাকে বলা হবে, পড়, তিনি
তখন বলবেন, আমি পড়তে জানি না। নবীজি সেটাই বলেছিলেন।
৫৭৯
এছাড়া ওল্ড টেস্টামেন্টে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা নাম ধরেও
বলা হয়েছে। এটা বলা হয়েছে song of solomon -এর
৫ অধ্যায়ের ১৬ অনুচ্ছেদে যে, তার
কণ্ঠ খুব মিষ্টি, সে খুব প্রিয়পাত্র, সে
আমার প্রিয়জন, সে আমার বন্ধু, শােন
জেরুজালেমের কন্যারা ।" হিব্রুতে মুহাম্মাদিন শব্দটার
অনুবাদ করা হয়েছে যে, খুব প্রিয়পাত্র। তবে সেমেটিক ভাষায় আরবী বা হিব্রুতে 'হুম’ দিয়ে
সম্মান বােঝানাে হয়।
যেমন
হলাে, আল্লাহ
এলােহিম অর্থাৎ সম্মান দেখানাে। তেমনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
সম্মান দেখিয়ে মুহাম্মাদিন বলা হচ্ছে। অর্থাৎ ওল্ডটেস্টামেন্টে নবীজি
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এখন যদি পড়েন, দেখবেন
এটার অনুবাদ করা হয়েছে অত্যন্ত প্রিয় পাত্র। | এবার দেখা যাক নিউটেস্টামেন্টে
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে কি উল্লেখ করা হয়েছে। এখন আমি
যদি খ্রিষ্টানদের কথা বলি, ওল্ডটেস্টামেন্টে যা বলা আছে সেটা তারা মেনে নেবে কারণ
এটা তাদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেলেরই একটা অংশ। সূরা আরাফের ১৫৭ নং আয়াতে আল্লাহ
বলেছেন- তারা অনুসরণ করে নিৰক্ষর নবীকে,যার উল্লেখ রয়েছে তাওরাত এবং ইঞ্জিলে।"
সূরা
সফ এর ৬নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন
وَإِذْ قَالَ عِيسَى ٱبْنُ مَرْيَمَ يَٰبَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ إِنِّى
رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيْكُم مُّصَدِّقًۭا لِّمَا بَيْنَ يَدَىَّ مِنَ ٱلتَّوْرَىٰةِ
وَمُبَشِّرًۢا بِرَسُولٍۢ يَأْتِى مِنۢ بَعْدِى ٱسْمُهُۥٓ أَحْمَدُ ۖ فَلَمَّا
جَآءَهُم بِٱلْبَيِّنَٰتِ قَالُوا۟ هَٰذَا سِحْرٌۭ مُّبِينٌۭ
স্মরণ
কর, যখন মরিয়ম-তনয় ঈসা (আঃ) বললঃ হে
বনী ইসরাইল! আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর প্রেরিত রসূল, আমার
পূর্ববর্তী তওরাতের আমি সত্যায়নকারী এবং আমি এমন একজন রসূলের সুসংবাদদাতা, যিনি
আমার পরে আগমন করবেন। তাঁর নাম আহমদ। অতঃপর যখন সে স্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে আগমন করল, তখন
তারা বললঃ এ তো এক প্রকাশ্য যাদু।
নিউটেস্টামেন্ট
পড়লে দেখা যায় সেখানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে অনেক
ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে। গসপেল অব জন এর ১৪ নং অধ্যায়ের ১৬ অনুচ্ছেদে বলা হচ্ছে-
যিশু বা ঈসা (আ) বলছেন- আমি পিতার কাছে প্রার্থনা করবাে, তিনি
সাহায্যকারী পাঠাবেন।
সে
সব সময় তােমাদের সাথেই থাকবে। গসপেল অব জন ১৫ অধ্যায়ের ৭নং অনুচ্ছেদে আছে- যখন
সেই সাহায্যকারী আসবে, আমার পিতা যাকে পাঠাবেন সে আমার সম্মান বৃদ্ধি করবে।
এরপর গসপেল অব জন এর ১৬ অধ্যায়ের ৭নং অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে- আমি তােমাদের
সত্যি কথাটাই বলি। আমি চলে গেলেই তােমাদের সবার জন্য ভালাে হবে। কারণ আমি না গেলে
সেই সাহায্যকারী আসবে না আর আমি গেলেই সে এখানে আসবে।” খ্রিষ্টানরা
এ সাহায্যকারী বলতে পবিত্র আত্মাকে বােঝায়।
এখন
এ ভবিষ্যত বাণীটা ভালাে করে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এখানে
বলা হচ্ছে আমি চলে গেলেই একজন সাহায্যকারী আসবেন। সাহায্যকারী আসার একমাত্র শর্তই
হলাে আমি চলে যাওয়া। তিনি চলে গেলে তারপরই সাহায্যকারী আসবেন। আমরা জানি যিশুকে
যখন ব্যস্টাইজ করা হয় পবিত্র আত্মা তখলাে ছিল। এমনকি যিশুখ্রীষ্ট
জন্মের
পূর্বেও পবিত্র আত্মা সেখানে ছিল । যখন তিনি মায়ের গর্ভে ছিলেন। তাহলে
সাহায্যকারী কখনাে পবিত্র আত্মা হতে পারে না। তারপর এ সাহাযকারী শব্দটা যদি গ্রীক
বা এ্যারােমিক ভাষা দেখেন, তাহলে দেখবেনগ্রীক ভাষায় এ শব্দটা হলাে- পেরাক্লিট, শব্দটার
অনুবাদ করা হয়েছে সাহায্যকারী । পেরাক্লিট শব্দের অর্থ আসলে
বিভিন্ন
ধর্ম গ্রন্থে হযরত মুহাম্মদ (সা) সমর্থন করা। মূল শব্দটা হলাে পেরাক্লিটস। যার
অর্থ যে প্রশংসা করে। অথবা যে প্রশংসা পাওয়ার যােগ্য। আমরা জানি যে, নবীজি
(স)-এর দুটো নাম, আহমদ আর মুহাম্মদ। শব্দটা যাই ধরেন, হােক
সমর্থন বা সাহায্যকারী কিংবা প্রশংসনীয় বা প্রশংসার যােগ্য এ কথাগুলাে সবচেয়ে
বেশি মিলে যায় শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ক্ষেত্রে। | গসপেল
অব জনের ১৬ নং অধ্যায়ের ১২০১৪ অনুচ্ছেদে আছে- যিশু বা ঈসা (আ) বলেছেন- তােমাদের
আমি অনেক কিছুই বলতে চাই, কিন্তু তােমরা এখন সেগুলাে বুঝবে না। কারণ সত্য আত্মা
তােমাদেরকে সত্যের পথে নিয়ে যাবে। সে তার নিজের কথাগুলাে বলবে না, যে
কথাগুলাে শুনবে সে গুলােই বলবে। সে আমাকে মহিমান্বিত করবে। সে তােমাদের ভবিষ্যতের
কথা বলবে।" এখানে বলা হয়েছে আমি তােমাদের
অনেক কিছুই বলতে চাই কিন্তু এখন তােমরা সেটা বুঝবে না। সত্য ভাল্ব যখন আসবে সে
তােমাদেরকে সত্য পথে নিয়ে যাবে। সে নিজের কথা বলবে না। সে যা শুনবে তাই বলবে। | আমরা
জানি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর যা ওহী এসেছিল তিনি সেটাই
বলেছিলেন। সে তার নিজের কথা বলবে না, যেগুলাে
শুনবে সেগুলােই বলবে। সে তােমাদের ভবিষ্যতের কথা বলবে। সে আমাকে মহিমান্বিত করবে।"
আমরা জানি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
যিশুকে মহিমান্বিত করেছেন পবিত্র কোরআনে আর হাদীসে । আমরা বিশ্বাস করি যিশু বা ঈসা
(আ) হলেন মসী বা খ্রিষ্ট। আমরা বিশ্বাস করি যে, তিনি
অলৌকিক ভাবে জন্মেছিলেন কোন পুরুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই । আমরা আরাে বিশ্বাস করি
তিনি আল্লাহর আদেশে মৃত মানুষকে জীবিত করেছিলেন, জন্মান্ধ
ও কুষ্ঠ রােগীদের সুস্থ করেছিলেন। তাহলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
যিশুকে মহিমান্বিত করেছেন। তাহলে এ ভবিষ্যত বাণীটাও আসলে আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে করা হয়েছে।
khub shundor likha
ReplyDelete