হিন্দু ধর্মে গ্রন্থে হযরত মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)
হিন্দু ধর্মে গ্রন্থে হযরত মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)
হিন্দু ধর্মগ্রন্থ প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যেমন: ১/ শ্রুতি, ২/
স্বৃতি। এখন আমরা জানবো শ্রুতি আর স্বৃতি
কি? শ্রুতি হল যা প্রকাশিত হয়েছে, যা মানুষ শুনেছে,
যা
সবাই বুঝতে পেরেছে। হিন্দু বিশেষজ্ঞদের
মতে শ্রুতি হলো
ইশ্বরের বাণী। আবার শ্রুতি দুই প্রকার। বেদ
ও উপনিষেদ। বেদ সংস্কৃতি শব্দ বিদ থেকে এসেছে। বেদ আবার চার প্রকার। ঋগবেদ, যজুর্বেদ,
অথর্ববেদ, সামবেদ। এই বেদ গুল কোন সময় পৃথিবীতে এসেছে তা কেউ জানে না। তবে স্বামী দেবানন্দর
মতে (তিনি আর্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা) এই বেদ গুল এসেছে একশ ৩২ কোটি বছর আগে। তবে বেশিরভাগ
বিশেষজ্ঞদের মতে এই বেদ গুলোর বয়স আনুমানিক চার হাজার বছর। এই
বেদ গুলো পৃথিবীর কোন অংশে প্রথমে এসেছে তা আমরা জানি না। কার উপর অবতির্ন বা নাজিল
হয়েছে তাও আমরা জানি না। তবে হিন্দুরা মনে করে এই বেদ গুল ইশ্বরের বাণী। বেদ এরপর স্থান
উপনিষেদের। উপনিষেদ সংস্কৃতি শব্দ। উপনিষেদ এসেছে সংস্কৃতি শব্দ উপা থেকে। যার অর্থ
কাছে। নি অর্থ নিচে। আর ষদ এর অর্থ বসা। অর্থাৎ কাছে এসে বসা। এক সময় ছাত্ররা শিক্ষকের
পায়ের কাছে বসতো। তাই এটার নাম উপনিষেদ। পৃথিবীতে ২০০ এর অধিক উপনিষেদ রয়েছে, তবে হিন্দুরা
বলে একশ আট। এদের মধ্যে কিছু আছে প্রধান উপনিষেদ। কেউ বলে দশটা কেউ বলে বারোটা। তবে
শ্রী রাধাকৃষ্ণ ১৮ টি নিয়ে বই লিখেছেন একে
আছে প্রধান উপনিষেদ বলে। পরের স্তরের ধর্মগ্রন্থগুলো
স্বৃতি। যার অর্থ মনে রাখা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন স্বৃতি নামক
গ্রন্থগুলো মানুষ লিখেছে। অর্থাৎ ঋষিরা লিখেছে। এগুলোকে বলে ধর্মশাস্ত্র। যার ধারা
মানুষ, সম্প্রদায়, সমাজ কিভাবে চলবে তার নির্দেশনা। স্বৃতির মধ্যে গুরুত্বপূর্ন হলো
বিভিন্ন পুরাণ। পূরাণ অর্থ প্রাচীন। এগুলোতে বিভিন্ন দেবতা, বিশ্ব সৃষ্টি, সাহিত্য
সম্পর্কে উল্লেখ আছে। মহাঋষি ব্যাস পূরাণ গুলোকে
১৮ ভাগে বিভক্ত করেছেন। এগুলের মধ্যে একটি
ভবিষ্যত পূরাণ। এই পূরাণে ভবিষ্যত সম্পর্কে
বলা হয়েছে।
ভবিষ্যত পূরাণের (তৃতীয় খন্ড অধ্যায়: ৩, শ্লোক: ৫-৮) উল্লেখ আছে একজন ম্লেচ্ছ
আসবেন তার সঙ্গীদের সাথে নিয়ে মরুস্থল থেকে। তার নাম হবে মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে
ওয়াসাল্লাম)। রাজা ভোজ এই দেবতুল্য মানুষকে স্নান করিয়ে পবিত্র করবেন। তাকে স্বাগত
জানাবেন সম্মানের সাথে। আর কথা বলবেন সম্মানের সাথে। আর বলবেন, হে মানবজাতীর গর্ব,
আপনি শয়তানকে হারানোর জন্য এক বিশাল বাহিনী বানিয়েছেন। ম্লেচ্ছ সংস্কৃত শব্দটির অর্থ বিদেশী। আপনারা জানেন
যে, মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) মানবজাতীর গর্ব। সূরা কালাম এর ৪ নং
আয়াতে বলা হয়েছে:
وَإِنَّكَ لَعَلَىٰ خُلُقٍ عَظِيمٍۢ
আপনি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী।
সূরা আহযাবের ২১ নং আয়াতে বলা হয়েছে:
لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ ٱللَّهِ أُسْوَةٌ
حَسَنَةٌۭ لِّمَن كَانَ يَرْجُوا۟ ٱللَّهَ وَٱلْيَوْمَ ٱلْءَاخِرَ وَذَكَرَ ٱللَّهَ
كَثِيرًۭا
তোমাদের
মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে তাদের জন্য রাসূলের অনুসরণের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।
ভবিষ্যত
পূরাণে আরো বলা হয়েছে, তিনি শয়তানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। আমরা জানি তিনি তাই করেছিলেন। এই ভবিষ্যত বাণিটি
হযরত মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)
এর
কথাই স্পষ্ট করে। কিছু মানুষ বলতে পারে যে,
এখানে ভোজ রাজার কথা যিনি ছিলেন এগারো শতাব্দীতে। হযরত মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে
ওয়াসাল্লাম) এর জন্মেরও ৫শ বছর পরে। আর তিনি
ছিলেন রাজা শিলাবাহনের দশম বংশদর। এই মানুষগুলো
বুঝতে পারে না যে, এটা মিশরের সম্রাটদের পদবীর মত। মিশরের সম্রাটদের পদবী ছিল ফারাও,
আর একজন ছিলেন না। অতীতে আরো অনেক ফারাও ছিল। আর রোমের সম্রাটদের পদবী ছিল সিজার। তেমনি
ভারতীয় রাজাদের পদবী ছিল ভোজ। আর ভোজ একজন ছিলেন না, এগার শতাব্দীর ভোজ রাজার পূর্বেও
অনেক ভোজ রাজা ছিলেন। আর ভবিষ্যত পূরাণে এগার শতাব্দীর ভোজ রাজার কথা বলা হয়নি। তার
আগের ভোজ রাজার কথা বলা হয়েছে। এরপর ভবিষ্যত পূরাণে তৃতীয় পর্ব, তৃতীয় খন্ডের ১০-১৭
অনুচ্ছেদে আছে- ম্লেচ্ছদের বসবাসের স্থান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখানে যে শত্রুরা আগে
রাজত্ব করতো, সেখানে এসেছে আরো শক্তিশালী শত্রু। আমি একজনকে পাঠাবো যার নাম হবে হযরত
মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)। মানুষকে সরল পথে পরিচালিত করবেন। হে রাজা
ভোজ তুমি পিসাচের রাজ্যে কখোনো যাবেনা। কারন আমি আমার দয়া দিয়ে তোমাকে পবিত্র করবো।
তারপর দেবতুল্য একজন মানুষ এসে রাজা ভোজকে বললো যে, এখানে আর্য ধর্ম প্রতিষ্ঠিত হবে।
এটা হবে ইশ্বরের পরমাত্মার আদেশে। আমার অনুশারিদের খৎণা করা থাকবে। তাদের মাথার পিছণে
টিকি থাকবে না। তাদের মুখে দাড়ি থাকবে। তারা একটা বিপ্লব করবে। তারা সালাত বা নামাজের
জন্যে ডাকবে। তারা সব হালাল খাবার খাবে। তারা শুকরের মাংশ খাবেনা। তারা লতাপাতা ধারা পবিত্র
হবেনা। তারা যুদ্ধের মাধ্যেমে পবিত্র হবে। তাদের বলা হবে মুসলিম। এই ভবিষ্যত বাণিটি
নিশ্চিত ভাবে হযরত মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) এর কথাই বলছে। কারণ
পূরাণে বলা আছে আমার অনুসারিদের খৎনা দেয়া থাকবে। আমরা জানি মুসলিমদের খৎনা করে। মুসলিমদের
মাথার পিছণে টিকি থাকে না। আর তাদের মুখে দাড়ি থাকবে, মুসলমানদের মুখে দাড়ি থাকে। তারা
নামাজের জন্যে ডাকবে। আমরা নামাজের জন্যে ডাকি। তারা বিভিন্ন পশুর মাংশ খাবে শুধু শুকরের
মাংশ খাবে না। কোরআনে চারবার বলা হেয়েছে:
সূরা আনামের ১৪৫ আয়াতে ও
সূরা নাহালের ১১৫ আয়াতে উল্লেখ আছে:-
إِنَّمَا حَرَّمَ
عَلَيْكُمُ ٱلْمَيْتَةَ وَٱلدَّمَ وَلَحْمَ ٱلْخِنزِيرِ وَمَآ أُهِلَّ لِغَيْرِ ٱللَّهِ
بِهِۦ ۖ فَمَنِ ٱضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍۢ وَلَا عَادٍۢ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌۭ
رَّحِيمٌۭ
আল্লাহ
তোমাদের জন্য হারাম করেছেন মৃত জীব, রক্ত, শূকরের মাংস আর যা যবেহ করার সময় আল্লাহ ছাড়া অন্যের নাম নেয়া
হয়েছে। কিন্তু কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্য
না হয়ে ও সীমালঙ্ঘন না ক’রে নিতান্ত নিরুপায় (হয়ে এসব খেতে বাধ্য) হলে আল্লাহ তো বড়ই ক্ষমাশীল, বড়ই দয়ালু।
ভবিষ্যত পূরাণে বলা তৃতীয় পর্ব, প্রথম খন্ডের ৩য়
অধ্যায়ের ২১-২৩ আরো বলা আছে- সাতটা
পবিত্র শহর কাশিতে, সেগুলো ভরে গেছে রাক্ষসে। ম্লেচ্ছ ধর্মের
অনুসারিরা ভাল মানুষ। তাদের মধ্যে সব ভাল গুনেই রয়েছে। আর সে দেশে সকল ধরণের পাপই বিদ্যমান।
হে ঋষি, তুমি তোমার প্রভুর নামকে সমুন্নত রেখা এখানে হযরত মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ও তার অনুসারিদের কথা বলা হয়েছে।
বেদেও
হযরত মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) এর কথা বলা হয়েছে। অথর্ববেদের
২০ নং গ্রন্থের ১২৭ নং অনুচ্ছেদের ১-৪ নং মন্ত্র। এটাকে বলে কুন্টাক শুক্তাক। কুন্টাক
অর্থ পেটের ভিতর লুকানো গ্রন্থি। কুন্টাকের আর একটা অর্থ গ্রন্থ
দুর্দশা, আর একটা অর্থ শান্তি। আর ইসলামের অর্থ একই। কুন্টাকের আর একটা অর্থ পৃথিবীর
কেন্দ্র। আমরা জানি, পবিত্র মক্কা শহর পৃথিবীর কেন্দ্রে অবস্থিত। পবিত্র কোরআনের
সূরা আল ইমরানের ৯৬ নং আয়াতে বলা হয়েছেঃ
إِنَّ أَوَّلَ بَيْتٍۢ
وُضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِى بِبَكَّةَ مُبَارَكًۭا وَهُدًۭى لِّلْعَٰلَمِين
নিশ্চয়
প্রথম ঘর, যা মানুষের জন্য স্থাপন করা হয়েছে, তা মক্কায়। যা বরকতময় ও হিদায়াত বিশ্ববাসীর জন্য।
অথর্ববেদের ২০ নং গ্রন্থের ১২৭ নং অনুচ্ছেদের ১ নং মন্ত্র বলা হয়েছে নরশংশা,
২ নং
মন্ত্র বলা হয়েছে উটে চড়া ঋষি। ৩ নং মন্ত্র বলা হয়েছে তিনি মহা
ঋষি। ৪ নং
মন্ত্র বলা হয়েছে তিনি বৈশাবী বের।
১ নং মন্ত্রঃ মানব কর্তৃক প্রশংসিত এক নবীর আগমন হবে-অথর্ব বেদে আগমনকারী
সেই নবী সম্পর্কে বলা হয়েছে- “ইদংজনা উপশ্রুত নরাশংসঃস্তবিষ্যতে।” (অথর্ব বেদ ২০ নম্বর গ্রন্থ, ১২৭ নম্বর অনুচ্ছেদ, ১ নম্বর মন্ত্র)
অর্থ: ‘এমন এক ব্যক্তির
আবির্ভাব হবে যিনি হবেন মানব কর্তৃক প্রশংসিত।’
আমরা যদি ‘নরাশংস’ শব্দটিকে মুহাম্মদ শব্দটির সাথে মিলিয়ে দেখি তাহলে দেখতে পাই দুটি শব্দের অর্থ
পুরোপুরি এক। ‘নরাশংস’ শব্দটির
অর্থ হচ্ছে নর দ্বারা অর্থাৎ মানুষ দ্বারা প্রশংসিত। তদ্রুপ মুহাম্মদ শব্দের অর্থও প্রশংসিত অর্থাৎ মানব কর্তৃক
যিনি অনেক বেশী প্রশংসিত।
২ নং মন্ত্রঃ সেই প্রতিশ্রুত নবী উটে আরোহণ করবেন- অথর্ব বেদের আরেক
স্থানে আছে- “উষ্ট্রা যস্য
প্রবাহনো বধুমন্তো দ্বির্দশ” (অথর্ব বেদ ২০ নম্বর গ্রন্থ, ১২৭ নম্বর অনুচ্ছেদ, ২ নম্বর মন্ত্র) অর্থাৎ ‘ঐ প্রশংসিত মহাপুরুষ উটের উপর আরোহণ করে আবির্ভূত হবেন। আর ভারতীয় ঋষি উঠের পিঠে চড়তে পারে না। কারন ব্রাম্মনদের উঠের পিঠে চড়া নিষেধ। মনুস্বৃতি
অধ্যায় ১১, অনুচ্ছেদ ২০২ বলা আছেঃ ব্রাম্মন কখোনো উঠ বা গাধার পিঠে চড়তে পারবে
না। তাই
তিনি হবেন বিদেশি।
৩ নং মন্ত্রঃ মামা ঋষি বা মহাঋষি।
কেউ বলে মামা, কেউ বলে মুহাম্মদ, কেউ বলে মহাঋষি।
৪ নং মন্ত্রঃ তিনি হবেন বের।
বের অর্থ যিনি প্রশংসা করেন। হযরত মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহে ওয়াসাল্লাম) আর এক নাম আহম্মেদ। আহম্মেদ অর্থ যিনি প্রশংসা করেন।
অথর্ববেদে হযরত মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)
আরো
ভবিষ্যতবাণী রয়েছে। অথর্ববেদের ২০ নং গ্রন্থের ২১ অনুচ্ছেদের ৬ নং মন্ত্রে আহযাবের
যুদ্ধ সম্পর্কে বলা হয়েছে। এই ঋষিকে দশ হাজার শত্রু সৈন্য থেকে রক্ষা করা হবে। আর তিনি
লড়াই না করে জয়ী হবে। আর আহযাবের যুদ্ধে মুসলিমরা লড়াই না করেই জয়ী হয়েছি। তিনি একজন
কারু হবেন। সংস্কৃতি কারু শব্দের অর্থ প্রশংসা করেন। আমাদের নবীর আর এক নাম আহম্মেদ। আহম্মেদ অর্থ যিনি প্রশংসা
করেন। অথর্ববেদের ২০ নং গ্রন্থের ২১ অনুচ্ছেদের ৭ নং মন্ত্রে বলা হয়েছে- মহান
ইশ্বর ২০ জন রাজাকে ক্ষমতাচ্যুত করবেন। আর তিনি আবান্দুকে ষাট হাজার নব্বইজন শত্রুর কবল থেকে রক্ষা করবেন। সংস্কৃতি
আবান্দু অর্থ এতিম। আবান্দু এর আর এক অর্থ প্রশংসনীয়। আমাদের নবীর নাম মুহাম্মদ। যার
অর্থ প্রশংসনীয়। মহান ইশ্বর ২০ জন রাজাকে ক্ষমতাচ্যুত করবেন। আমরা জানি তখনকার দিনে
মক্কাতে আলাদা ২০ গোত্র ছিল। আর হযরত
মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)
২০
জন রাজাকেই জয় করেন। আর তখন হযরত
মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বিরোধিদের সংখ্যাও ছিল ষাট হাজার।
আর একই কথা বলা আছে ঋগবেদে। ঋগবেদের
১নং গ্রন্থে ৫৩ নং অনুচ্ছেদের ৯ নং মন্ত্রে বলা হয়েছে- সুষরমা। যার অর্থ প্রশংসনীয়। যেটা
আমাদের নবীর নামের অর্থ। নবীজির কথা আরো আছে অগ্নির ৬৪ নং মন্ত্রে। এই ঋষি মায়ের
দুধ পান করবেন না। আর আমরা জানি তিনি মায়ের দুধ পান করেনি। তিনি বিবি হালিমার দুধ পান
করেছিলেন। বিবি হালিমা ছিলেন হযরত
মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) এর দাই মা।
উত্তরচিকার ১৫০০ নং মন্ত্রে, ইন্দ্রের
২ নং অধ্যায়ের ১৫২ মন্ত্রে, যজুর্বেদের ৩১ অধ্যায়ের ১৮ নং অনুচ্ছেদে, বেদের ৮ নং গ্রন্থের
৬ নং অনুচ্ছেদের ১০ মন্ত্রে, অথর্ববেদের ৮ নং গ্রন্থের ৫নং অনুচ্ছেদের ১৬ মন্ত্রে, অথর্ববেদের ২০ নং
গ্রন্থের ১২৬ অনুচ্ছেদের ১৪ নং মন্ত্রে হযরত মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) কে আহম্মেদ ছাড়াও
অন্য নামে ডাকা হয়েছে। সেটা হল নরশংসা।
এর প্রথম অংশ নর অর্থ মানুষ বা
ব্যক্তি আর শাংসা এর (মূল শব্দ হলো
প্রশংসা) অর্থ যে মানুষ প্রশংসনীয়। তাহলে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কে মোহাম্মদ
বলে হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলোর
অনেক স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঋগবেদের
১নংগ্রন্থের ১৩ নং অনুচ্ছেদের ৩নং মন্ত্রে, ১৮
নং অনুচ্ছেদের ৯নং মন্ত্রে, ১০৬ নং অনুচ্ছেদের ৪নং মন্ত্র, ১৪২
নং অনুচ্ছেদের ৩ মন্ত্র, ২নং গ্রন্থের ৩নং অনুচ্ছেদের ২নং মন্ত্র, ৫নং
গ্রন্থের ৫নং অনুচ্ছেদের ২নং মন্ত্র ৭নং গ্রন্থের ২য় অনুচ্ছেদের ২নং মন্ত্র, ১০
নং গ্রন্থের ৬৪ নং অনুচ্ছেদের ৩নং মন্ত্র, ১৮২
নং অধ্যায়ের ৫৭ নং অনুচ্ছেদে, যজুর্বেদের
২০ নং অধ্যায়ের ৩৭ অনুচ্ছদের ৫৭ নং অনুচ্ছেদে, ২১
অধ্যায়ের ৩১ অনুচ্ছেদে, ৫৫ অনুচ্ছেদে, ২৮
অধ্যায়ের ২নং অনুচ্ছেদে, ১৯ অনুচ্ছেদে, ৪২
নং অনুচ্ছেদ, এভাবে সারাদিন শুধু রেফারেন্স দেয়া যাবে যে হিন্দু
ধর্ম গ্রন্থগুলোতে
নবীজির নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
হাতে
সময় অল্প, না হলে হিন্দু ধর্ম গ্রন্থে প্রদত্ত মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বর্ণনা দিয়ে একটা লেকচার দেয়া যেত। তাই
হিন্দু ধর্মে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বর্ণনা নিয়ে আর একটা
ভবিষ্যত বাণীর কথা বলবো।
আর সেটা হল কলকি অবতার । ভগবত পুরাণে ১২ নং খন্ডের ২নং অধ্যায়ের ১৮-২০ নং শ্লোকে
বলা হয়েছে যে, “বিধুয়াস নামে একজন মহত হৃদয়ের ব্রাহ্মণের, ঘরে
যে সাম্বলা নামে একটা গ্রামের প্রধান ঘরে জন্মাবে কলকি। তাকে ঈশ্বর উৎকৃষ্ট গুণাবলী
দেবেন। আর ঈশ্বর তাকে দিবেন আটটি অলৌকিক গুণ | তিনি
সাদা ঘোড়ায় চড়বেন।
তার ডান হাতে থাকবে একটি তরবারি।" এরপর
ভগবত পুরাণে ১নং খন্ডে তৃতীয় অধ্যায়ের ২৫ নং মন্ত্রে উল্লেখ করা হয়েছে- “কলি
যুগে যখন রাজারা হবে ডাকাতের ন্যায়, তখন
বিধুয়াসের ঘরে জন্ম নিবে কলি," এছাড়াও
পুরাণের দ্বিতীয় অধ্যায়ের ৪নং মন্ত্রে বলা হয়েছে- “বিষ্ণুয়াস
নামে এক ব্যক্তির ঘরে, যিনি মহত হৃদয় ব্রাহ্মণ, যিনি
সাম্বলা গ্রামে প্রধান, তার ঘরে জন্ম নিবে কলি।" কলকি
পুরানের দ্বিতীয় অধ্যায়ের ৫নং মন্ত্রে বলা হয়েছে- “কলকিকে
চারজন সাহায্য করবে, ৭নং মন্ত্রে বলা হয়েছে- “কলকিকে
যুদ্ধ
ক্ষেত্রে দেবদূত বা ফেরেশতারা সাহায্য করবে।” | কলকি
পুরানের দ্বিতীয় অধ্যায়ের ১১নং মন্ত্রে বলা হয়েছে- “বিয়াস
নামে এক ব্যক্তির ঘরে সুমতির গর্ভে কলিক অবতার জন্মাবে।” আবার
১৫নং মন্ত্রে আছে- তিনি মাধব মাসের দ্বাদশ দিনে জন্ম নিবেন।
এক
কথায় হিন্দু ধর্ম গ্রন্থের এ কথাগুলি কলিক অবতার সম্পর্কে বলা হয়েছে। কথাগুলি
সাজিয়ে আরো সংক্ষেপে বলছি। প্রথমত- তার বাবার নাম হবে বিষ্ণুয়াস।
বিঞ্চু মানে ঈশ্বর আর ইয়াস মানে ভৃত্য। অর্থাৎ ঈশ্বরের ভৃত্য। এটার আরবি করলে হবে
আব্দুল্লাহ। অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাবা। দ্বিতীয়ত
তার মায়ের নাম হবে সুমতি। সুমতি এই সংস্কৃত শব্দের অর্থ প্রশান্ত, প্রশান্তি, শান্তি।
এর আরবি শব্দ হবে আমিনাহ। অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
মাতা। তৃতীয়ত তিনি জন্ম নিবেন সাম্বালা নামে একটি গ্রাম। সাম্বালা মানে একটি
প্রশান্ত এবং শান্তির জায়গা। আমরা জানি মক্কাকে বলে দারুল আমান বা শান্তির ঘর।
নবীজি মক্কায় জন্ম গ্রহণ করেন। এরপর বলা হয়েছে, তিনি
সাম্বালার প্রধান ব্যক্তির ঘরে জন্ম নিবেন। আমরা জানি তিনি মক্কার প্রধান ব্যক্তির
ঘরে জন্ম নিয়ে ছিলেন। চতুর্থত বলা হয়েছে তিনি মাধব মাসের দ্বাদশ দিনে জন্মাবেন।
আমরা জানি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখে
জন্মেছিলেন। আরো
বলা হয়েছে যে তিনি হবেন শেষ ঋষি বা শেষ নবী।
আমরা
জানি, পবিত্র কোরআনের সূরা আহযাবের ৪০নং আয়তে বলা হয়েছে-
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের
কোন পুরুষের পিতা নয়, তবে তিনি আল্লাহর প্রেরিত রাসূল এবং নবুওয়াতের সীল মোহর। নিশ্চয় আল্লাহ সব বিষয়
সম্পর্কে জ্ঞাত।” তাহলে কোরআন বলছে যে, নবীজি
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন সর্বশেষ রাসূল ।
বিভিন্ন
ধর্মগ্রন্থে হযরত মুহাম্মদ (সা) এরপর বলা হয়েছে যে, এ ঋষি প্রথমবার তার জ্ঞান বা আলোকে
প্রাপ্ত হবেন রাতের বেলা একটি গুহার ভিতর, তারপর তিনি উত্তর দিকে রওনা গিয়ে ফিরে আসবেন।
আমরা
জানি মুহাম্মদ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথম ওহী পেয়েছিলেন হেরা গুহায়
রাতের বেলায় জাবলে নূর পর্বতে। পবিত্র কোরআনের সূরা দুখানের ২-৩ নং আয়াতে এবং
সূরা কদরের ১নং আয়াতে উল্লেখ
অর্থঃ
নিশ্চয় আমি মহিমান্বিত রাতে কোরআন নাযিল করেছি।
আমরা
জানি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় হিজরত করেন, মদীনা
মক্কার উত্তর দিকে এবং তিনি পরে আবার মক্কায় ফিরে আসেন। আরো বলা হয়েছে যে, ঈশ্বর
তাকে দেবেন অতি উৎকৃষ্ট গুণাবলী এবং আটটি অলৌকিক শক্তি। হিন্দু ধর্ম গ্রন্থ মতে এ
আটটি অলৌকিক শক্তি হলো-
জ্ঞান, আত্মসংযম, জ্ঞান
বিতরণ, অভিজাত বংশ, সাহসিকতা, কম
কথা বলা, মহানুভবতা এবং পরোপকারিতা।
এ
আটটি গুনের সবগুলিই সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর মধ্যে বিদ্যমান ছিল। তারপর বলা হয়েছে তিনি হবেন পৃথিবীর সব
মানুষের পথ প্রদর্শক। পবিত্র কোরআনের সূরা সাবার ২৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে -
وَمَآ أَرْسَلْنَٰكَ إِلَّا كَآفَّةًۭ لِّلنَّاسِ بَشِيرًۭا
وَنَذِيرًۭا وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ-
অর্থ:- আমি
আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যে সুসংবাদাতা ও
সতর্ককারী রূপে পাঠিয়েছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না…
এরপর
বলা হয়েছে যে, কলকি অবতার একটি সাদা ঘোড়ায়
চড়বেন। আমরা জানি যে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বোরাকে চড়েছিলেন যখন তিনি মিরাজে
যান। এরপর আরো
বলা হয়েছে যে, তার ডানা হাতে একটি তরবারি থাকবে। আমরা জানি মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এবং আত্মরক্ষার জন্য তার
ডান হাতে তরবারি থাকত । আবার বলা হয়েছে যে, তিনি
অজ্ঞ লোকদের
সরল পথে পরিচালিত করবেন। আমরা জানি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আরবদেরকে পথ দেখিয়েছিলেন। আরবে সে সময়কে বলা হত আইয়ামে জাহেলিয়া বা অজ্ঞতার ও
অন্ধকারের যুগ। আর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোরআন ও আল্লাহর
সাহায্যে আরবদের অন্ধকার থেকে আলোতে
এনেছিলেন। এরপর বলা হয়েছে, তাকে সাহায্য করবে চারজন সহচর। এখানে চারজন সাহাবীর কথা
বলা হচ্ছে অর্থাৎ খোলাফায়ে
রাশেদীন আবু বকর, ওমর, ওসমান
ও আলী (রা)। তারপর বলা হয়েছে যে, তাকে
যুদ্ধ ক্ষেত্রে দেবদূত বা ফেরেশতারা সাহায্য করবে। পবিত্র আল-কোরআনের সূরা ইমরানের
১২৩-১২৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে
অর্থঃ এছাড়াও
সূরা আনফালের ৪-৯ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বদরের যুদ্ধে ফেরেশতারা নবীজির সাহায্য করেছিল। আর
মুসলমানরা সেই যুদ্ধে জয়লাভ করে। এখানে আমি সংক্ষেপে হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলোতে কলকি অবতার সম্পর্কে যে বর্ণনা আছে তা তুলে ধরলাম।
হিন্দু
ধর্মের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বেদপ্রকাশ উপাধ্যায়
তার কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব গ্রন্থে বেদকে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেন,
১। “হোতার মিন্দ্রো হোতার মিন্দ্রো
মহাসূরিন্দ্রাঃ অল্লো জ্যেষ্টং শ্রেষ্ঠং পরমং ব্রহ্মণং অল্লাম ॥ অল্লো রসূল মোহাম্মদ রকং বরস্য
অল্লো অল্লাম। আদাল্লাং
বুকমেকং অল্লাবুকং লিখর্তকম।” অর্থ: দেবতাদের রাজা আল্লাহ আদি ও সকলের বড় ইন্দ্রের গুরু। আল্লাহ পূর্ণ ব্রহ্ম, মোহাম্মদ আল্লাহর রাসূল পরম বরণীয় আল্লাহ আল্লাহ। তাঁহার অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ আর কেহ নাই।
আল্লাহ অক্ষয় অব্যয় স্বয়ম্ভু।
(কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২৩)
২। হিন্দুধর্মের শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ
সংস্কারক শ্রীশ্রী বালক ব্রহ্মচারী সামবেদে শ্রীকৃষ্ণের নাম-গন্ধও নাই বলে উল্লেখ করেছেন।
সেখানে যার নাম আছে তাঁর নাম ‘‘মদৌ বর্তিতা দেবাদ কারান্তে প্রকৃত্তিতা ।
বৃষানাং ভক্ষয়েৎ সদা মেদা শাস্ত্রেচ স্মৃতা। ” যে দেবের নামের প্রথম অক্ষর ‘ম’ ও
শেষ ‘দ’ এবং যিনি বৃষমাংস
ভক্ষণ সর্বকালের জন্য পূর্ণ বৈধ করিবেন তিনিই হইবেন বেদানুযয়ী ঋষি”মোহাম্মদ -এর নামের প্রথম ও শেষ অক্ষর বেদের নির্দেশ
যথাক্রমে ‘ম’ ও ‘দ’ হওয়াতে তাঁকে
মান্যকরাও শাস্ত্রেরই নির্দেশ। (কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২৩)
৩। “লা-ইলাহা হরতি পাপম ইল্ইলাহা পরম
পাদম, জন্ম বৈকুণ্ঠ অপ
ইনুতি ত জপি নাম মুহম্মদ ”
অর্থ: লা-ইলাহার আশ্রয় ছাড়া পাপ মুক্তির কোনো প্রকৃত আশ্রয় নাই। বৈকুণ্ঠে জন্ম লাভের আশা করিলে ইলাহর আশ্রয় নেয়া ছাড়া
কোনো গতি নাই। আর এ জন্য
মুহাম্মাদ - এর প্রদর্শিত পথের অনুসরণ ও অনুকরণ একান্তই অপরিহার্য। (কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২২)
৪। অল্লো রসুল মহম্মদ রকং বরস্য। ”
স্মিন্নস্তিদরে ম্লেচ্ছ আচার্যেন সমন্বিতঃ। মহামদ ইতখ্যাতঃ শিষ্যশাখা সমম্বিতঃ। নৃপশ্চৈব
মহাদেবং মুস্থল নিবাসিনম।
চন্দনাদিভির ভ্যার্চ্য তুষ্টার মনসা র্হম। নমস্তে গিরিজানাথ মুরুস্থল নিবাসিনম।। ত্রিপুরাসুনাশায় বহুমায়া প্রবর্তিনে।। ম্লেচ্ছৈর্গপ্তায় শুদ্ধায সচিছাদানন্দরুপিণে। ‘যথাসময়ে
‘মহাম্মদ’ নামে একজন মহাপুরুষ আবির্ভূত হইবেন যাহার মরুস্থ (আরব দেশে) সাথে স্বয়
সহচরবৃন্দও থাকিবেন। হে
মরুর প্রভু! হে জগতগুরু! আপনার প্রতি আমাদের স্তুতিবাদ। আপনি জগতের সমুদয় কলুষাদি ধ্বংসের উপয় অবগত আছেন। আপনাকে প্রণতি
জানাই। হে মহাত্মা! আমরা
আপনার দাসানুদাস। আমাদেরকে আপনার পদমূলে আশ্রয় প্রদান করুন। (কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২৪)
এবার আসি বেদের কথায়, হিন্দুধর্মের পরিভাষায় রসূলকে অবতার বলা হয়। সামনে আমরা অবতার নিয়েই আলোচনা করবো। ঈশ্বরের পক্ষ থেকে যাকে
অবতীর্ণ করা হয় তাকেই অবতার বলা
হয়। সে হিসেবে যিনি সর্ব শেষে আসবেন তাকেই অন্তিম অবতার বলাহয়। অন্তিম অর্থ শেষ এবং অবতার অর্থ রাসূল অর্থাৎ শেষ
রাসুল। হিন্দুধর্মে যুগ
চারটি সত্য, ত্রেতা, দাপর, কলি। কলিযুগের শেষ অবতার যাকে আমাদের পরিভাষায় শেষনবী বলি সেই কল্কি অবতারের নাম পিতার
নাম, জন্মস্থান ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা আপনাদের ধর্মীয় গ্রন্থে
পাওয়া যায়, আপনারা যার
অপেক্ষা করছেন, এগুলো বিশ্লেষণ
করলে দেখা যায় সকল মানুষের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রমাণিত
হয়। নিম্নে তার বর্ণনা দেয়া
হলো। অন্তিম অবতারের নাম অন্তিম অবতার বা শেষ রাসূলের নাম হবে ‘নরাশংস’। “নরাশংসং সৃধৃষ্টমমপশ্যং সপ্রথস্তমং দিবো ন সদ্মম
খস॥ ৯ (ঋগে¦দ ১/১৮/৯) আমরা একটু বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ‘নরাশংস’ সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয় ‘প্রশংসিত ব্যক্তি’। যার আরবী অর্থ হয়
‘মুহাম্মদ’। আর সকল মানুষের সর্ব শেষ নবীর নাম হলো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
অন্তিম অবতারের পিতার নাম অন্তিম
অবতারের পিতার নাম হবে ‘বিষ্ণযশা’। ‘‘সুমত্যাং বিষ্ণুযশসা গর্ভমাধত্ত বৈষ্ণবম্।’’
(কল্কি-পুরান-১/২/১১) এর বিশ্লেষণ করলে দেখাযাবে, ‘বিষ্ণযশা’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয়, ‘মালিকের দাস’।
যার আরবী অনুবাদ হয়‘ আবদুল্লাহ’। আর সর্ব শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লামের পিতার নাম ছিল
আবদুল্লাহ। অন্তিম অবতারের
মাতার নাম অন্তিম অবতারের মাতার নাম সম্পর্কে কল্কি পুরানে লিখা আছে যে, তার নাম হবে ‘সুমতি’। ‘‘সুমত্যাং মাতরি বিভো। কন্যায়াংত্বন্নিদেশত:।।” (কল্কিপুরাণ-১/২/৪) এর বিশ্লেষণ
করলে দেখা যাবে, ‘সুমতি’ শব্দটি
সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয় ‘নিরাপদ-শান্তি’। যার আরবী অনুবাদ হয় ‘আমেনা’। আর সর্ব শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাতার নাম ছিল আমেনা। অন্তিম অবতারের
জন্মস্থান অন্তিম অবতারের
জন্মস্থান সম্পর্কে কল্কি পুরানে লেখা আছে, তিনি জন্ম গ্রহণ করবেন , ‘শম্ভল’ নামক স্থানে। ‘‘শম্ভলে বিষ্ণুযশসো গৃহে
প্রদুর্ভবাম্যহম।’’ (কল্কিপুরাণ-১/২/৪)
এর বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ‘শম্ভল’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয়, ‘শান্তির স্থান’। যার আরবী অনুবাদ হয়‘ বালাদুল আমিন’। আর মক্কা মুকাররমার নাম হলো, বালাদুল আমিন। আর মুহাম্মদ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় জন্মগ্রহণ করেছেন। অন্তিম
অবতারের জন্ম তারিখ অন্তিম অবতার ‘মাধব মাসের শুক্ল পক্ষের দ্বাদশ তারিখে
জন্মগ্রহণ করবেন।’ ‘‘দ্বাদশ্যাং
শুক্লপক্ষস্য মাধবে মাসি মাধবঃ।” ‘‘দ্বাদশ্যাং শুক্লপক্ষস্য মাধবে মাসি মাধবঃ।” (কল্কিপুরাণ-১/২/১৫) মাধব অর্থ বৈশাখ
মাস, বিক্রমী ক্যালেন্ডার মতে বৈশাখকে বসন্তের মাস বলা হয়, যার আরবী অর্থ হয় ‘রবি’। শুক্ল পক্ষ, অর্থাৎ ‘প্রথম অংশ’ যার আরবী অনুবাদ হয়, ‘আউওয়াল’। একত্রে হয় ‘রবিউল আউওয়াল’ দ্বাদশ তারিখ অর্থাৎ ১২ তারিখ। আর সর্বশেষ
সকল মানুষের নবী হযরত মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘রবিউল আউওয়াল মাসের ১২তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন।
No comments